বিশ্বকাপের শুরুটা দুর্দান্ত হলেও শেষটা হয়েছে মলিন ভারতের। স্বাগতিক হয়েও অস্ট্রেলিয়ার কাছে শিরোপা হাতছাড়া করেছে রোহিত শর্মার দল। টুর্নামেন্টজুড়ে একচেটিয়া পারফর্ম করা দলটি এভাবে শিরোপা হাতছাড়া করবে, সেটা অনেকেই কল্পনাও করতে পারেনি। রোহিতদের সঙ্গে একপেশী ফাইনালে ষষ্ঠ শিরোপা ঘরে তোলে প্যাট কামিন্সের দল।
ফাইনাল হারলেও বিশ্বকাপ একাদশে দাপট ভারতেরই। ১১ জনের মধ্যে ছয়জনই স্বাগতিক। অথচ চ্যাম্পিয়ন হয়েও একাদশে মাত্র দুজন জায়গা পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। এ দলটির অধিনায়ক করা হয়েছে রানার্সআপ দল থেকে রোহিত শর্মাকে। ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী একাদশ সাজিয়েছে আইসিসি।
কুইন্টন ডি কক
টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই ওয়ানডে সংস্করণ থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন ডি কক। নিজের শেষ টুর্নামেন্টটা রাঙিয়ে রাখার সব আয়োজনই করে এসেছিলেন তিনি। দল সেমিতে গিয়ে ব্যর্থ হলেও ৫৯.৪০ গড়ে রান করেছেন ৫৯৪, স্ট্রাইকরেট ১০৭.০২।
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক)
বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন রোহিত। একের পর এক ম্যাচে প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান তিনি। শিরোপা না জিতলেও ব্যাটিংয়ে উজ্জ্বল টুর্নামেন্ট পার করেছেন তিনি। ৫৪.২৭ গড়ে করেছেন ৫৯৭ রান।
বিরাট কোহলি
রেকর্ড ভাঙার আর গড়ার কারিগর হয়ে গেলেন কোহলি। এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড তো গড়লেনই, হলেন টুর্নামেন্টসেরাও । ১১ ম্যাচ খেলা কোহলি ৯৬.৬২ গড়ে করেছেন ৭৬৫ রান। তিন সেঞ্চুরি ও ছয় ফিফটিতে দারুণ এক টুর্নামেন্ট কেটেছে তার।
ড্যারিল মিচেল
নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপ সেমির পথে দারুণ ভূমিকা রেখেছিলেন রাচিন রবীন্দ্র। তবে ব্যাটিং অর্ডার বিবেচনায় সুযোগ হয়নি তার। এ জায়গায় তাই সুযোগ মিলেছে মিচেলের। ৬৯ গড়ে তিনি করেছেন ৫৫২ রান, স্ট্রাইকরেট ১১১.০৬।
কেএল রাহুল
ভারতের অন্য সবার মতোই ছন্দে ছিলেন রাহুল। ১০ ম্যাচে ৭৫.৩৩ গড়ে তিনি করেছেন ৪৫২ রান। নেদারল্যান্ডের সঙ্গে আছে সেঞ্চুরিও।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল
বিশ্বকাপের অবিশ্বাস্য ইনিংসটি খেলেছেন ম্যাক্সওয়েল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারানো ম্যাচে ২০১ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ৪০ বলের দ্রুততম সেঞ্চুরিতেও নাম লিখিয়েছেন ম্যাক্সি। ৬৬.৬৬ গড়ে করেন ৪০০ রান, বল হাতে নেন ৬ উইকেট।
রবীন্দ্র জাদেজা
অলরাউন্ডার হওয়াতে এই একাদশে সুযোগ মিলেছে জাদেজার। ব্যাট হাতে আহামরি কিছু করতে পারেননি, ১২০ রান করেন। তবে বল হাতে ওভারপ্রতি ৪.২৫ রান দিয়ে ১৬ উইকেট নেন জাদেজা।
যশপ্রীত বুমরা
ভারতের পেস আক্রমণকে শুরু থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বুমরা। ওভারপ্রতি ৪.০৬ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন ২০ উইকেট। তবে তার বোলিংয়েই সতীর্থদের উইকেট নেওয়ার পথটা মসৃণ হয়।
দিলশান মাদুশঙ্কা
বিশ্বকাপে খুব বাজে পারফর্ম করেছে শ্রীলঙ্কা। টেবিলের ৯ এ থেকে শেষ করেছে টুর্নামেন্ট। তবে দলটির হয়ে দারুণ পারফর্ম করেছেন দিলশান মাদুশঙ্কা। ২৫ গড়ে নেন ২১ উইকেট।
অ্যাডাম জাম্পা
রান দিতে যেন কার্পণ্য করেন না, তেমনি উইকেট নিতেও মায়া-দয়া নেই জাম্পার। বিশ্বকাপের আগে খরুচে বোলিংয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। তবে টুর্নামেন্ট শুরু হতেই বদলে যাওয়ার শুরু। ২২.৩৯ গড়ে ২৩ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ জেতানোর নায়ক তিনিও।
মোহাম্মদ শামি
বিশ্বকাপের শুরুতেই বেঞ্চে বসে ছিলেন শামি। হার্দিক পান্ডিয়ার চোটে একাদশে সুযোগ মিলে তার। প্রথম ম্যাচেই নেন পাঁচ উইকেট। এক টুর্নামেন্টে ৫ এর অধিক তিনবার উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব গড়েন তিনি। মাত্র ৭ ম্যাচে ১০.৭০ গড়ে নিয়েছেন ২৪ উইকেট। বিশ্বকাপের ইতিহাসেই ৫৫ উইকেটে ভারতের সেরা তিনি। তার ওপরে আছেন বিশ্বের মাত্র চারজন।